সময় কত দ্রুত ফুরিয়ে যায়! দেখতে দেখতে তিনটি বছর পেরিয়ে গেল, অথচ আমার মাথার ওপর সেই বিশাল বটবৃক্ষের ছায়া আর নেই। বাবা—একটি শব্দ, একটি আশ্রয়, এক অবর্ণনীয় অনুভূতি। বাবা মানে নির্ভরতার প্রাচীর, অসীম ছায়ার মতো স্নেহ আর নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমি বাবার অভাব বোধ করি। কিন্তু সত্যি বলতে, যতোদিন তাঁকে কাছে পেয়েছি, তাঁর অবদান, তাঁর উপস্থিতির গভীরতা কখনও পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারিনি। আজ, যখন তিনি নেই, তখন বুঝি—তিনি ছিলেন আমার জীবনের ভিত্তি, আমার আত্মবিশ্বাসের শক্তি।
আমার অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করা, শিক্ষক হওয়া, বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়া—এই সব অর্জনগুলো বাবার চোখে দেখানোর সাধ আমার আজীবন অপূর্ণ থেকে যাবে। এই কষ্ট, এই অপূর্ণতা আমাকে প্রতিনিয়ত বিদ্ধ করে। বাবার অনুপস্থিতি আমার হৃদয়ে শূন্যতার যে গভীরতা সৃষ্টি করেছে, তা কোনো কিছু দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। তবুও, প্রতিটি অর্জনের পর মনে মনে ভেবেছি—বাবা যদি এখানে থাকতেন! যদি একবার তাঁর চোখে গর্বের ঝিলিক দেখতে পেতাম!
প্রতিনিয়ত আমি একটাই প্রার্থনা করি—পৃথিবীর প্রতিটি বাবা-মা যেন তাঁদের সন্তানদের সফলতা দেখে যেতে পারেন। সন্তানের প্রতিটি ছোট-বড় সাফল্য যেন তাঁদের জীবনের আনন্দ হয়ে ওঠে।
আল্লাহ্র কাছে আকুল প্রার্থনা:
“হে প্রভু! আমার পিতা-মাতার প্রতি দয়া করুন, যেমন করে তাঁরা আমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছেন।” (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ১৭:২৪)
“হে আমাদের রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন সেই দিন, যেদিন হিসাব-নিকাশ কায়েম করা হবে।” (সূরা ইবরাহীম, আয়াত ১৪:৪১)
তাঁর রেখে যাওয়া স্মৃতি, ভালোবাসা আর স্নেহের গভীরতায় আজও পথ চলি। আমি জানি, বাবা দূরে থেকেও আমার প্রতিটি কাজে অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন।